11866399_1050788218272674_4672194702692289653_n 11880596_1050788284939334_8047628371497221044_n

১৬তম আর্ন্তজাতিক যুব দিবসে যুবদের কর্মোদ্দীপনা, সৃষ্টিশীলতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বাড়িয়ে উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে ঢাকায় ইয়ূথ এন্ডিং হাঙ্গার- বাংলাদেশ এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল  ১৬তম  আন্তর্জাতিক যুব দিবস যার  মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ইয়ূথ সিভিক এনগেজমেন্ট’। গত ১২ আগষ্ট, ২০১৫ সকাল ১০.০০ টায় ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে (তোপখানা রোড, সেগুন বাগিচা)  গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিবর্গ ও শতাধিক তরুণদের অংশগ্রহনে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ পাঠ করে ইয়ূথ এন্ডিং হাঙ্গার- বাংলাদেশ-এর জাতীয় ফোরামের সদস্য আল-জাহিদ। অভিজ্ঞতা বিনিময় হয় অতিথি ও অংশগ্রহনকারীর মধ্যে এবং একটি প্রানবন্ত প্যানেল ডিসকাশন হয় যার  সঞ্চালনায় ছিলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার ।

তরুণ ও প্রবীনদের আলোচনার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠছে স্থানীয় উন্নয়নে তরুণদের সম্পৃক্ত হওয়ার ক্ষেত্রসমূহ ও করণীয়। এছাড়াও আর্ন্তজাতিক যুব দিবস উপলক্ষে কেক কাটা ও আয়োজিত অনুচ্ছেদ প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন অসাধারণ এবং অনুকরণীয় ব্যাক্তিবর্গ, ড. বদিউল আলম মজুমদার (গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশ), ড.হামিদা হোসেন (বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী), অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ (ক¤িপউটার বিজ্ঞানী, শিক্ষক-বুয়েট, কলামিস্ট এবং লেখক), অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরিন (পরিচালক, ইনিস্টিটিউট অফ ডিজাস্টার ম্যানজেমন্টে এন্ড ভালনারাবিলিটি স্টাডিজ, ঢা.বি), ড. মাহবুব হোসেন মজুমদার (অধ্যাপক – ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ গণিত অলি¤পয়াডের জাতীয় কোচ ও দলনেতা), জনাব কাফি রতন (সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, সি.পি.বি), যমুনা টেলিভিশনের  বিশেষ সংবাদদাতা জনাব মাহফুজ মিশু, মাউন্ট এভারেস্ট বিজয়ী জনাব এম এ  মুহিত। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন  বিশিষ্ট উদ্যোক্তা ও উন্নয়ন সংগঠক জনাব তাজিমা হোসেন মজুমদার সহ আরো অনেক সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
বিশিষ্ট উন্নয়ন সংগঠক ও উদ্যোক্তা জনাব তাজিমা হোসেন মজুমদার তরুণদের সকল ইতিবাচক কাজে সম্পৃক্ত হয়ে নেতৃত্ব  প্রদানের আহ্বান জানান।
ড. বদিউল আলম মজুমদার (গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশ) জাতি হিসেবে আমরা একটি ‘ক্রস রোডে’র মুখোমুখি। আমাদের সামনে আজ দুটো বিপরীতমুখী পথ খোলা। একটি পথ হলো তরুণদের বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া এবং তাদের উৎপাদনশীল ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত করা। তাদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন ও তাদের বিকাশের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা।
প্যানেল ডিসকাসনের পরে ১৬তম আর্ন্তজাতিক যুব দিবস উপলক্ষে কেক কাটার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। অনুষ্ঠানে ঢাকা সিটি ইউনিট কোওর্ডিনেটরসহ বিভিন্ন ইউনিটের ইয়ূথ লিডারবৃন্দ অংশগ্রহণ করে।
এভারেস্ট বিজয়ী জনাব মুহিত বলেন মাউন্ট এভারেস্ট জয় হওয়ার আরো ৭৫ বছর আগে থেকে চেষ্টা করে এসেছিল অভিযাত্রীরা, শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে কিন্তু সেই মানুষ এভারেস্টকে জয় করেছে কারণ তারা লেগে ছিল। তাই আমাদেরকে কে ভাল কাজে লেগে থাকতে হবে যদি জয় করতে চাই আর এর কোনো বিকল্প নেই বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
জনাব কাফি রতন (সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, সি.পি.বি) বলেন তরুণদের উপরে নির্ভর করছে আগামী  ভবিষ্যৎ তাই তাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ আমাদেরই সৃষ্টি করতে হবে।
বিশিষ্ট গনমাধ্যমকর্মী ও তরুণদের প্রিয় মুখ জনাব মাহফুজ মিশু তরুণদের অনেক সংকটের পাশাপাশি বেশ কিছু মৌলিক বিষয় তুলে ধরেন। তরুণদের সজ্ঞায়ন নিয়ে আলোচনা করে বলেন যারা নিয়মিত রাষ্ট্র দ্বায়িত্ব গ্রহন করার জন্য বার বার ক্ষমতায় আসে এবং তাদের তরুণ সংগঠন যারা নেতৃত্ব  দেয় তারা তরুণ কিনা বলে প্রশ্ন রাখেন। হাজার সংকটের মাঝেও তিনি বেশ কিছু আশার আলো দেখিয়ে নরেন্দ্র মোদীর  সরকার গঠনের সময় এক উৎসাহমূলক গল্প শোনান ।
ড. মাহবুব হোসেন মজুমদার ,অধ্যাপক – ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ গণিত অলি¤পয়াডের জাতীয় কোচ ও গণিত দলনেতা, গণিত অলিম্পিয়াডের অসাধারণ বিজয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা এখন সবচেয়ে শক্তিশালী দল , আমাদের চেয়ে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা ভাল হওয়া সত্ত্বেও আমরা তাদের পরাজিত করেছি। আর এটা দাড়াই প্রমানিত হয় যে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দক্ষতা আর সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে সব জয় করতে পারি। আর এ জন্য দরকার জয় করার জন্য  অদম্য ইচ্ছা ও শেষ পর্যন্ত লেগে থাকার প্রবণতা।
অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরিন (পরিচালক, ইনিস্টিটিউট অফ ডিজাস্টার ম্যানজেমন্ট এন্ড ভালনারাবিলিটি স্টাডিজ, ঢা.বি) বলেন বাল্যবিবাহ , শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি, নারীর প্রতি এসিড ও অন্যান্য সহিংসতা প্রতিরোধে দেশব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান, বাল্যববিাহ  ও যৌতুক প্রতিরোধ প্রচারাভিযান, পরিবেশ সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যা আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক।
ড.হামিদা হোসেন (বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী) বলেন আমাদের দেশে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতন আন্দোলন এবং সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবীতে গড়ে ওঠা শাহবাগ আন্দোলন পর্যন্ত জাতীয় জীবনের ক্রান্তি লগ্নে তরুণদের অসামান্য অবদান রাখার মধ্য দিয়ে বহুবার তারা তা প্রমাণ করেছে। সুতরাং স্থানীয় উন্নয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিক হিসেবে তাদের অংশগ্রহণ ও স¤পৃক্ততার গুরুত্ব অনস্বীকার্য, অপরিহার্য এবং প্রমাণিত।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ (কম্পিউটার বিজ্ঞানী, শিক্ষক-বুয়েট, কলামিস্ট এবং লেখক) বলেন বাংলাদেশের ভূ-আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশি। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সম্পদ ও জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। দেশের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ তরুণ প্রজন্ম। এদের শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য ও জীবনদক্ষতার ওপর নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যৎ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *